একজন নারী উদ্যোক্তা সালমা আনসার ঝর্ণা এবং তার পথ চলা

 একজন নারী উদ্যোক্তা সালমা আনসার ঝর্ণা এবং তার পথ চলা

এই তো কয়েক দশক আগে কর্মক্ষেত্রে নারীদের পদচারণা চোখে পড়ার মতো ছিলো না। কিন্তু বর্তমানে নারীরা কোনো কাজেই পিছিয়ে নেই। তারা তাদের নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই আধুনিক যোগ আর স্মার্ট ফোন এর মাধ্যমে। এখন নারীরা ঘরে বাইরে সব পেশায় নিজেদের নিয়োজিত করছে। এবং সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। তেমনি একজন তরুণ নারী উদ্যোক্তা সালমা আনসার ঝর্ণা তুলে ধরেছেন,রেড লাইভের চিফ অপারেটিং অফিসার রিয়ানুর ইসলাম

শুরুতে জানতে চাই কোথায় বড় হওয়া?

ছোট থেকে বড় হয়ে উঠা রাজধানী ঢাকাতেই।দেশের বাড়ি দিনাজপুরে। কিন্তু স্কুল জীবনের শুরুই হয়েছে ঢাকায়।বর্তমানে ঢাকার মোহাম্মদপুরে বসবাস করছি।মতিঝিল আইডিয়াল থেকে এস,এস,সি শেষ করে।এরপর এইচ,এস,সি,বিবিএ, এবং এমবিএ ঢাকা সিটি কলেজ থেকে শেষ করেছি।

আপনার উদ্যোক্তা হওয়ার পিছনের গল্প জানতে চাই?

মূলত বোরকা-আবায়ার প্রতি ভালোবাসা থেকেই আমি আমার উদ্যোগটা শুরু করেছিলাম।আমাকে বোরকা পরতে কেউ কখনও বাধ্য করেনি।আমার পরিবার থেকেও কখনও বোরকা পরার প্রতি বাধ্য-বাধকতা ছিলো না বললেই চলে।তবে সবসময় শালীন পোশাক পরার প্রতি একটা নির্দেশনা ছিলো ছোটবেলা থেকেই।আমার নিজের বোরকার প্রতি সবসময় একটা ঝোঁক কাজ করতো।নিজের উদ্যোগেই বোরকা পরা শুরু করেছিলাম।সেই আগ্রহ থেকেই একসময় মনে হলো আমি আমার এই প্রিয় জিনিসটা নিয়ে কাজ করতে পারি তো!তারপর যেই ভাবা সেই কাজ!প্রথমে কিছু আবায়ার ডিজাইন করলাম।সেগুলো বানাতে দিলাম আমারই জমানো কিছু টাকা দিয়ে,মজুরি দিলাম।শুরুটা এভাবেই।

আমার উদ্যোগের পিছনের কারন বোরকা-আবায়ার মতো মডেস্ট ওয়্যার এর প্রতি নিখাদ ভালোবাসা।সেই সাথে বোরকা-আবায়া যারা পরেন তাদেরকে একটু সাহায্য করা।অনেকেই আছেন এমন একটা মডেস্ট ওয়্যার পরতে চান যেটাতে তাকে একটু ইউনিক লাগবে। তিনি হয়তো চাইছেন এমন একটা ডিজাইন যেটা তিনি কারও কাছে বানিয়ে নিতে পারছেন না।তার সাথে একটু কথা বললেই আমি বুঝে তাকে একটা সাজেশন দিয়ে সল্যুউশন করে একটা ডিজাইনটা দাঁড় করিয়ে দিতে পারছি এবং তার কল্পনার কাঙ্খিত সেই বোরকা বা আবায়াটা তার হাতে পৌঁছে দিচ্ছি।তাকে তার স্বপ্নের পোশাকটি হাতে তুলে দিতে পারছি।এটাই আমার উদ্যোগের মূল লক্ষ।

আপনি কি পন্য নিয়ে কাজ করছেন?

আমি মূলত মডেষ্ট ওয়্যার নিয়েই কাজ করছি। বোরকা-আবায়া,মডেস্ট কুর্তি ইত্যাদি মডেষ্ট ওয়্যার নিয়ে আমার কাজ।

একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে কখনও কি কোন বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়েছে কি?

আমাদরে সমাজে নারীরা যেমন বাঁধার সম্মুখীন হয় আবার অনেক ক্ষেত্রে পাশে অনেক সাপোর্টিভ মানুষও পাওয়া যায়।এদিক দিয়ে আমার পরিবার আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছে,আলহামদুলিল্লাহ।আমার বাবা-মা,ভাই তারা সবসময় আমার পাশে ছিলো। আর পাশে উই নামের বিজনেস প্ল্যাটফর্মটা পেয়েছিলাম।সেটাও আমার জন্যে খুব বড় একটা সাপোর্ট ছিলো।উই গ্রুপে ই-ক্যাব এর সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজীব আহমেদ স্যার আমাদের মতো নতুন উদ্যোক্তাদেরকে উৎসাহিত করতেন। নিজের উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যেতে স্যারের পোস্টগুলোতে খুবই অনুপ্রাণিত হতাম, এখনও হই।সব মিলে আমি আমার উদ্যোক্তা জীবনের পারিপার্শ্বিক পরিবেশটা পজেটিভ পেয়েছি,আলহামদুলিল্লাহ। তবে আমার পণ্যের কাঁচামাল কম মূল্যে সংগ্রহ করাটা আমার জন্যে একটু কষ্টকর হয়।আমার বাসা থেকে অনেক দূরে যেতে হয় কম মূল্যে কাঁচামাল আনতে। কষ্ট হলেও এতে করে আমি আমার ক্রেতাদেরকে বাজার দরে পণ্যটি দিতে সক্ষম হই।

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

আমার উদ্যোগ ” আবায়া অঙ্গন” কে আমি অনেক বড় একটা ব্র্যান্ড এ রুপান্তর করতে চাই।বাংলাদেশের বোরকা-আবায়া গুণে মানে সেরা।আমার প্রতিষ্ঠানের মডেষ্ট ওয়্যার গুলো সারা দেশে এবং দেশের বাহিরেও ছড়িয়ে দিতে চাই।

RedLive

Related post

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।